সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
রূপালী স্বাস্থ্য।।
১. এসিটামিনোফেন বা প্যারাসিটামলের খুব বেশি ঝুঁকি না থাকলেও যাদের লিভারের সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। আমাদের দেখা অনেকেরই ক্রনিক লিভার ডিজিজ, হেপাটাইটিস বি ও সি সংক্রমণ এখনো লুক্কায়িত অবস্থায় আছে। না জেনে তাদের বেশি প্যারাসিটামল খাওয়া বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
২. নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি দুনিয়াজুড়ে বাত, ব্যথা, প্রদাহজনিত ব্যথায় এবং কাটা-ছেঁড়া শল্যচিকিৎসার পর সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। প্রয়োজনে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এ ধরনের ওষুধ রোগ সারাতে ও তীব্রতা কমাতে কার্যকর। কিন্তু কিডনি অকার্যকারিতা, হাঁপানি রোগী ও পেপটিক আলসারের রোগীর জন্য কখনো এরা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
৩. ব্যথা কমানোর আরেকটি ওষুধ হলো স্টেরয়েড। চিকিৎসাবিজ্ঞানে নানা পরিস্থিতিতে এই স্টেরয়েড ব্যবহারের নির্দেশনা আছে। কিন্তু না জেনে-বুঝে স্টেরয়েড ওষুধ দিনের পর দিন খাওয়া, স্টেরয়েড-সংবলিত টোটকা ওষুধ খেতে থাকা নানা ধরনের শারীরিক বৈকল্য করে; যা জীবনসংহারীও হতে পারে। তাই চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া স্টেরয়েড সেবন করা উচিত নয়।
৪. মোদ্দা কথা হলো, ব্যথার ওষুধ আমাদের জীবনে প্রায় প্রায়ই খেতে হয়। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলাই ভালো। সম্ভব হলে অবশ্যই ব্যথানাশক ঔষধ খাবার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ঠিক কী মাত্রায় কত দিন খাবেন, ভালো করে বুঝে নিন। আপনি অন্য কোনো ওষুধ খাচ্ছেন কি না, তা কী; অন্য কোনো রোগবালাই আছে কি না, অন্তসত্ত্বা কি না বা সন্তান ধারণের চেষ্টা করছেন কি না, এগুলো চিকিৎসককে অবহিত করুন। কোনো ওষুধে এর আগে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল কি না, তা-ও জানান।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ব্যথার ওষুধ খেয়ে ব্যথা কমিয়ে আমরা অনেক সময় আসল রোগকে দাবিয়ে রাখি। ফলে রোগ ধরা পড়তে সময় নেয়। তাই ওষুধ খেয়ে ব্যথা দাবিয়ে না রেখে প্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ণয় করুন। ব্যথার চিকিৎসার চেয়ে কারণটির চিকিৎসাই জরুরি।
ডা: কে.এম. জাহিদুল ইসলাম
এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এমএস (অর্থোপেডিক সার্জারী) অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) ঢাকা।